• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আজকের সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে ভর্তি ফর্ম পূরনে অনিয়মের অভিযোগ

আজকের সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২৪  

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সরকার যুবকদের কাজে লাগাতে ২০১৭ সালে যুবনীতি ঘোষণা করে। এ নীতিমালায় দেশের ৪২শতাংশ যুবকদের বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষে আত্মকর্মসংস্থান, সামাজিক বৈষম্য, বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজে লাগানোসহ য্বু সমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে কাজ করছে বর্তমান সরকার।

তারই ধারাবাহিকতায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রতি বছর ১৮ বছর থেকে ৩৫ বছর বয়সের যুবদের বিভিন্ন কোর্সে প্রশিক্ষণ এবং প্রশিক্ষিতদের মাঝে ঋণ দিয়ে তাদেরকে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সাতক্ষীরাতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সাতটি উপজেলার চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ শেষে ৬৭৯ জন যুবকদের মাঝে ঋণ প্রদান করেছে। এসব যুবদের মাঝে সর্বনিম্ন চল্লিশ হাজার থেকে সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত যুব ঋণ দেওয়া হয়েছে।

চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ২ কোটি ৩০ লাখ ৫০হাজার টাকা যুব ঋণ দেওয়া হয়। আত্মকর্মস্থানে প্রদত্ত ঋণ আদায়ের হার ৯৩ শতাংশ এবং পরিবার কর্মসূচিতে ৯৮ শতাংশ।

সম্প্রতি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর তালতলা সাতক্ষীরার আওতায় ৭টি ট্রেডে প্রায় ২৮৫জন যুবক ও যুবতিকে প্রশিক্ষণের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে কম্পিউটার ব্যাসিক এন্ড আইসিটি এ্যাপ্লিকেশন(অনাবাসিক) ৬ মাস মেয়াদে ৭০জন, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড হাউজ ওয়ারিং ৩০জন, ইলেকট্রনিক্স (অনাবাসিক) ৩০জন, রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ারকন্ডিশনিং (অনাবাসিক) ৩০জন, মর্ডান অফিস ম্যানেজমেন্ট এন্ড কম্পিউটার এ্যাপ্লিকেশন (অনাবাসিক) ৪০জন, পোষাক তৈরী (অনাবাসিক) মেয়াদ ৩মাস ২৫জন, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ ও কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কোর্স (আবাসিক) ৩মাস মেয়াদি ৬০জন কে প্রশিক্ষণের জন্য নেওয়া হবে।

আগামী ১ জুলাই থেকে আবেদনকারিদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে প্রার্থীদের নেওয়া হবে। এদিকে ৭টি ট্রেডে ২৮৫জন প্রশিক্ষণার্থী নিতে ইতোমধ্যে অনলাইনে সাতক্ষীরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে আবেদন নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আবেদন পূরনে সাতক্ষীরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা লক্ষ্য করা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক জানান, মর্ডান অফিস ম্যানেজমেন্ট এন্ড কম্পিউটার এ্যাপ্লিকেশন (অনাবাসিক) ট্রেডে যোগাযোগ ছাড়া আবেদন জমা নিচ্ছেনা না।

সূত্রে জানা গেছে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের দর্জী প্রশিক্ষক বাহার উদ্দীন ও অফিস সহকারি গোলাম মোস্তফা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ভেতরে নিজেরা ইয়াছিন আলী নামক জনৈক ব্যক্তিকে বসিয়ে তাদের অফিস কক্ষে শতশত নারী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন পূরণ করে দিচ্ছেন। বিনিময়ে ওই সমস্ত প্রার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে আদায় করছেন। তবে, যুব উন্নয়ন অফিস থেকে যে সমস্ত প্রার্থীরা আবেদন করছেন, তাদের কে ওই প্রশিক্ষণে ভর্তির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে।

অফিসের লোক দিয়ে আবেদন করলে প্রার্থীদের নিকট থেকে কোন প্রকার টাকা নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও, অফিস সহকারি গোলাম মোস্তফা সিন্ডিকেট করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

এদিকে, সূত্রে আরো জানা যায় আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি বেকার যুবদের দক্ষ গাড়ি চালক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সাতক্ষীরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার অধীনে না দিয়ে যুব উন্নয়নের উচ্চমান সহকারি গোলাম মোস্তফার অধীনে দায়িত্ব দিয়েছেন। এতে করে সরকারের বরাদ্দকৃত সব অর্থ প্রশিক্ষণার্থীর পেছনে খরচ না করে, তা থেকে অর্থ বাঁচিয়ে লোপাট করা হয়।

এব্যাপারে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অফিস সহকারি গোলাম মোস্তফার সাথে টাকা নেওয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান আমরা শুধুমাত্র দুই একজন প্রার্থীর ফর্ম পূরণ করে, ফর্ম পূর্ণের নিয়ম দেখিয়ে দিয়েছি। বিনিময়ে কোন টাকা গ্রহণ করিনি।

এব্যাপারে সাতক্ষীরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সঞ্জীত কুমার দাস অনিয়মের কথা অস্বিকার করেন। তিনি বলেন এখানে কোন প্রার্থীর ফর্ম পূরণ করা হচ্ছে না। বাইরে যে কোন দোকান থেকে অথবা প্রার্থীরা নিজেরা অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতে পারবে। তবে গাড়ি চালক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থীর জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করে খুব সামান্য টাকা উদ্ধৃত থাকে।